দীর্ঘ সাত বছর পর সৌদি আরবে শ্রম বাজারের দ্বার খোলার পর পরই সৌদি যেতে আগ্রহীদের নিবন্ধন চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই নগরীর আগ্রবাদ সরকারি কার্য ভবন-২ এ অবস্থিত জনশক্তি কার্যালয়ে ভিড় জমিয়েছেন আগ্রহীরা।
সকালে চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় মঙ্গলবার থেকে বিদেশ যেতে আগ্রহীদের মধ্যে ফরম বিতরণ শুরু হয়েছে। গণমাধ্যমে এ খবর প্রচারিত হলে মঙ্গলবার থেকেই নগরীর আগ্রাবাদ সরকারি কার্যভবন-২ এ অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলা জনশক্তি কার্যালয়ে আগ্রহীরা নিবন্ধনের জন্য ভিড় জমান। সকাল থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে শত শত মানুষ জনশক্তি অফিসের সরবরাহকৃত ফরম সংগ্রহ করছেন। এটি প্রতিদিন চলবে বলে জানানো হয়।
চট্টগ্রাম জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জহিরুল আলম মজুমদান বাংলামেইলকে জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সম্প্রতি বাংলাদেশের শ্রমিক নেয়ার উপর সৌদি আরব সরকার নিষেজ্ঞা তুলে দেয়ায় নতুন করে শ্রমিক নেয়া শুরু হয়েছে। বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সঙ্গে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দ্বিপাক্ষীয় একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। প্রথম দফায় প্রতিমাসে ১০ হাজার করে ১২ মাসে মোট ১ লক্ষ ২০ হাজার কর্মী নেবে সৌদি সরকার। এ মাসে সৌদি আরবের পক্ষ থেকে প্রাথমিকভাবে ৬ হাজার চালক নেয়ার চাহিদাপত্র বাংলাদেশ সরকারকে দিয়েছে। এছাড়া পরবর্তীতে অন্যান্য ক্যাটাগরির শ্রমিকও নেয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এবার জেলার জনসংখ্যার আনুপাতিক হারে রেনডম সিলেক্টের মাধ্যমে সৌদিতে কর্মী পাঠানো হবে। আর সর্বনিম্ন বেতন ধরা হয়েছে ৮শ রিয়াল।
নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জনশক্তি অফিসের এ কর্মকর্তা জানান, প্রতিদিন ১৮-৪৫ বছর বয়সী আগ্রহী পুরুষ কর্মীরা তাদের নাম নিবন্ধন করতে পারবেন। গৃহকর্মী হিসেবে আগ্রহী নারীদের বয়স ২৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত ফরম পূরণ করতে হবে। এসময় এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পাসপোর্টের ফটোকপি (১-৫ পৃষ্টা) জন্ম নিবন্ধন বা জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি অথবা নাগিরকত্বের সনদপত্রের ফটোকপি সঙ্গে আনতে হবে।
এছাড়া শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কাজের অভিজ্ঞতা সনদের (যদি থাকে) ফটোকপি আনতে হবে। পাশাপাশি আগ্রহীদের একজন নমিনির নাম ও ফোন নম্বর, স্থায়ী ঠিকানা অর্থাৎ যে ঠিকানায় যোগাযোগ করা যাবে তা উল্লেখ করতে হবে। নিবন্ধনের আবেদনপত্রের সঙ্গে সোনালী ব্যাংকের দেড়শ টাকার একটি পে-অর্ডার জমা দিতে হবে।
সরহকারী পরিচালক জহিরুল আলম মজুমদার বাংলামেইলকে বলেন, ‘নিবন্ধন একটি চলমান প্রক্রিয়া। নিবন্ধনকৃতদের মধ্য থেকে বুয়েট নিয়ন্ত্রিত একটি ডাটাবেজে সংরক্ষিতদের প্রাথমিকভাবে নির্বাচিতদের এসএমএসের মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। সেখান থেকে স্বাস্থ্য ও পেশাগত দক্ষতা প্রমাণ সাপেক্ষে চূড়ান্ত নির্বাচনের মাধ্যমে ভিসার জন্য মনোনীত করা হবে। এসব প্রক্রিয়াসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক প্রক্রিয়াগুলো সরকার অনুমদিত রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে করা হবে। তবে সরকার যাবতীয় কার্যক্রম মনিটরিং করবে। এর ফলে বেশি টাকা দিয়ে আর সৌদি আরব যেতে হবে না। সরকার নির্ধারিত ৩০ হাজার টাকা দিয়েই নির্বাচিতরা এবার বিদেশ যেতে পারবেন।’
0 comments:
Post a Comment